অধ্যায়-০৫ঃ উচ্চ মাধ্যমিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির পঞ্চম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানমূলক প্রশ্নসমূহ

প্রশ্নঃ কম্পিউটার প্রোগ্রাম কী?
উত্তরঃ কম্পিউটারে কোনো একটি বিশেষ কার্য সম্পাদন বা সমস্যা সমাধানের জন্য রচিত বা লিখিত ধারাবাহিক কতগুলো বিশেষ নির্দেশাবলী (instruction) বা কমান্ডকে কম্পিউটার প্রোগ্রাম বলে।
প্রশ্নঃ প্রোগ্রামিং ভাষা কী?
উত্তরঃ কম্পিউটাকে আমাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী জানানোর জন্য এক বিশেষ ধরণের ভাষা ব্যবহার হয়। এ বিশেষ ধরণের ভাষা কম্পিউটার প্রোগ্রাম রচনার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে বলে একে প্রোগ্রামিং ভাষা বা Programming Language বলে।
প্রশ্নঃ যান্ত্রিক ভাষা কাকে বলে?
উত্তরঃ কম্পিউটার যন্ত্রটি সরাসরি যে ভাষা বুঝতে পারে সেই ভাষাকে যান্ত্রিক ভাষা বলে।
প্রশ্নঃ নিম্নস্তরের ভাষা কাকে বলে?
উত্তরঃ যান্ত্রিক ভাষা শুধুমাত্র ০ ও ১ দিয়ে লেখা হয়, সেজন্য যান্ত্রিক ভাষাকে নিম্নস্তরের ভাষা বলা হয়।
প্রশ্নঃ কিসের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের ভাষা লেখা হয়?
উত্তরঃ বাইনারি ১ দ্বারা বিদ্যুৎ আছে (on) এবং ০ দ্বারা বিদ্যুৎ নেই (off) এর উপর ভিত্তি করেই কম্পিউটারের ভাষা তৈরি করা হয়।
প্রশ্নঃ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষার কয়টি প্রজন্ম?
উত্তরঃ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষার ৫টি প্রজন্ম।
প্রশ্নঃ অনুবাদক প্রোগ্রাম কাকে বলে?
উত্তরঃ যে প্রোগ্রাম কম্পিউটারের উৎস প্রোগ্রাম (যে ভাষায় প্রোগ্রামটি লেখা হয়) কে যন্ত্র ভাষায় অনুবাদ করে বস্তু প্রোগ্রামে রূপান্তর করে সে প্রোগ্রামকে অনুবাদক প্রোগ্রাম বলে। যেমন: কিউবেসিকে একটি প্রোগ্রাম লেখা হলো কিন্তু কম্পিউটার এ প্রোগ্রামটি বুঝবে না, এ প্রোগ্রামটিকে অনুবাদ করে মেশিনের ভাষায় (বাইনারিতে) বুঝিয়ে দিতে হয়। এ অনুবাদের কাজে অনুবাদক প্রোগ্রাম ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্নঃ অনুবাদক প্রোগ্রাম কয় প্রকার?
উত্তরঃ তিন প্রকার।
- অ্যাসেম্বলার
- কম্পাইলার
- ইন্টারপ্রেটার
প্রশ্নঃ অ্যাসেম্বলার কী?
উত্তরঃ ইহা অ্যাসেম্বলি ভাষায় লিখিত প্রোগ্রামকে মেশিন ভাষায় অনুবাদ করে। এটি কোন কাজের সংক্ষিপ্ত শব্দ দ্বারা প্রোগ্রাম রচনা করা হয়।
প্রশ্নঃ অ্যাসেম্বলারের কাজ লিখ?
উত্তরঃ নিম্নে অ্যাসেম্বলারের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো দেওয়া হলোঃ
- নেমোনিক কোডকে মেশিন ভাষায় অনুবাদ করে।
- প্রত্যেক নির্দেশ ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করা, ঠিক না থাকলে ঠিক করা।
- সব নির্দেশ ও ডেটা প্রধান মেমরিতে রাখে।
প্রশ্নঃ কম্পাইলার কী?
উত্তরঃ কম্পাইলার উচ্চস্তরের ভাষার উৎস প্রোগ্রামকে বস্তু প্রোগ্রামে অনুবাদ করে। কম্পাইলার সম্পূর্ণ প্রোগ্রামটিকে এক সঙ্গে পড়ে এবং এক সঙ্গে অনুবাদ করে। ভিন্ন ভিন্ন উচ্চস্তরের ভাষার জন্য ভিন্ন ভিন্ন কম্পাইলার লাগে। কোনো নির্দিষ্ট কম্পাইলার একটি মাত্র উচ্চস্তরের ভাষাকে মেশিন ভাষায় পরিণত করতে পারে। যেমন: যে কম্পাইলার BASIC কে মেশিন ভাষায় অনুবাদ করতে পারে তা FORTRAN কে মেশিন ভাষায় অনুবাদ করতে পারে না।
প্রশ্নঃ কম্পাইলারের কাজ লিখ?
উত্তরঃ নিম্নে কম্পাইলারের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো দেওয়া হলোঃ
i. উৎস প্রোগ্রামকে বস্তু প্রোগ্রামে অনুবাদ করা।
ii. প্রোগ্রামকে লিংক করা।
iii. প্রোগ্রামে কোনো ভুল থাকলে তা জানানো।
প্রয়োজনে বস্তু বা উৎস প্রোগ্রামকে প্রিন্ট করা।
প্রশ্নঃ ইন্টারপ্রেটার কী?
উত্তরঃ ইহা ব্যবহারে প্রোগ্রামের ভুল সংশোধন করা ও প্রোগ্রাম পরিবর্তন করা সহজ হয়। কারণ ইন্টারপ্রেটারের প্রোগ্রাম আকারে ছোট বলে মেমরি বাঁচে। তাছাড়া ছোট কম্পিউটারে ইন্টারপ্রেটার ব্যবহৃত হয়। ইহা এক লাইন করে পড়ে ও অনুবাদ করে।
প্রশ্নঃ অ্যালগরিদম কাকে বলে?
উত্তরঃ বিশিষ্ট গণিতবিদ আল খারিজমীর নাম থেকে অ্যাগরিদম কথাটির উৎপত্তি হয়েছে। কোন সমস্যা সমাধানের ধাপসমূহকে ভাষাগতভাবে লিপিবদ্ধ করাকে অ্যালগরিদম বলে। সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোগ্রাম রচনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় অংশের নাম অ্যালগরিদম। প্র্রোগ্রাম রচনা ও নির্বাহের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপগুলো পর্যায়ক্রমিকভাবে লিপিবদ্ধ থাকে অ্যালগরিদমে।
প্রশ্নঃ ফ্লোচার্ট কী?
উত্তরঃ ফ্লোচার্ট হচ্ছে এক ধরণের রেখাচিত্র যার সাহায্যে একটি অ্যালগরিদম বা প্রক্রিয়াকে প্রকাশ করা যায়।
প্রশ্নঃ ফ্লোচার্ট কয় প্রকার?
উত্তরঃ ২ প্রকার। যথা:
ক. সিস্টেম ফ্লোচার্ট খ. প্রোগ্রাম ফ্লোচার্ট।
প্রশ্নঃ সিস্টেম ফ্লোচার্ট কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন সংগঠনের সকল কাজের একটি চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করলে তাকে সিস্টেম ফ্লোচার্ট বলা হয়।
প্রশ্নঃ প্রোগ্রাম ফ্লোচার্ট কী?
উত্তরঃ কোন প্রোগ্রামের অ্যালগরিদম রেখাচিত্রের সাহায্যে প্রকাশ করাকে প্রোগ্রাম ফ্লোচার্ট বলে।
প্রশ্নঃ ডিবাগিং কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রোগ্রামের ভুল-ত্রুটি সংশোধন করাকে ডিবাগিং বলে।
প্রশ্নঃ প্রোগ্রামে কয় ধরনের ভুল হয়?
উত্তরঃ ৩ ধরনের ভুল হয়।
ক. সিনটেক্স ভুল,
খ. লজিক্যাল ভুল ও
গ. রানটাইম ও এক্সিকিউশন টাইম ভুল।
প্রশ্নঃ সিনটেক্স ভুল কী?
উত্তরঃ সাধারণত প্রোগ্রামের ভাষার ব্যাকরণগত ভুলগুলোকে সিনটেক্স ভুল (Syntax Error) বলে। যেমনঃ বানান ভুল, কমা, ব্রাকেট না দেওয়া।
প্রশ্নঃ যুক্তিগত ভুল কী?
উত্তরঃ প্রোগ্রামে যুক্তিগত যে সমস্ত ভুলগুলো থাকে সেগুলোকে যুক্তিগত ভুল (Logical Error) বলা হয়।
প্রশ্নঃ রানটাইম ও এক্সিকিউশন টাইম ভুল কী?
উত্তরঃ কম্পিউটারকে ভুল ডেটা জানালে বা ডেটার ফরমেট ঠিক না থাকলে রান টাইম এ্যারোর ছাপায়। যে সব গাণিতিক প্রক্রিয়া সম্পাদন করা যায় না তা করতে গেলেও সিনট্যাক্স ভুল হয়। যেমন শূ্ন্য দিয়ে ভাগ করা কিংবা ঋণ সংখ্যার বর্গমুল বা লগারিদম বের করা। এসব ক্ষেত্রেও ভুলের বার্তা ছাপা হয়।
প্রশ্নঃ অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং কী?
উত্তরঃ প্রোগ্রামিং মডেলগুলোর মধ্যে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং মডেল নতুন এবং জনপ্রিয়। অবজেক্ট বা চিত্রভিত্তিক কমান্ডের সাহায্যে চালিত প্রোগ্রামকে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং বলা হয়।
প্রশ্নঃ ইভেন্ট কী?
উত্তরঃ কী-বোর্ডের কোনো কী-তে চাপ দেওয়া, কোনো বিশেষ কন্ট্রোলের উপর মাউসের পয়েন্টার দিয়ে ক্লিক করা ইত্যাদি হলো ইভেন্ট।
প্রশ্নঃ ডেটা টাইপ কী?
উত্তরঃ ডেটার ধরনকে ডেটা টাইপ বলা হয়। C প্রোগ্রামিং এ বিভিন্ন প্রকার ডেটা নিয়ে কাজ করা হয়।
প্রশ্নঃ ইউনারি অপারেটর কী?
উত্তরঃ যে সকল অপারেটর একটি মাত্র অপারেন্ড নিয়ে কাজ করে তাদের ইউনারি অপারেটর বলে।
প্রশ্নঃ বাইনারি অপারেটর কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সব অপারেটর দুইটি অপারেন্ড নিয়ে কাজ করে তাদেরকে বাইনারি অপারেটর বলে ।
প্রশ্নঃ কী ওয়ার্ড কী?
উত্তরঃ বিশেষ কাজে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত শব্দগুলে কে কী ওয়ার্ড বলে।
প্রশ্নঃ স্টেটমেন্ট কী?
উত্তরঃ প্রোগ্রামে কোন এক্সপ্রেশনের শেষে যখন সেমিকোলন (;) দেওয়া হয়, তখন প্রোগ্রামের ভাষায় একে স্টেটমেন্ট বলা হয়।
প্রশ্নঃ কন্ট্রোল স্টেটমেন্ট কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রোগ্রামে শর্ত সাপেক্ষে কোন স্টেটমেন্ট সম্পাদনের জন্য কন্ডিশনাল কন্ট্রোল ব্যবহার হয়। এরূপ শর্ত যুক্ত স্টেটমেন্টকে কন্ডিশনাল কন্ট্রোল স্টেটমেন্ট বলে।
প্রশ্নঃ অ্যারে কী?
উত্তরঃ অ্যারে হলো একই ধরনের ডেটার সমাবেশ। কতকগুলো ভেরিয়েবল ডেটা উপাদানের সমষ্টিকে অ্যারে বলে। অ্যারে শব্দের অর্থ হলো শ্রেণী বা বিন্যাস। একই জাতীয় বা সমজাতীয় ডেটার বিন্যাসকে বলা হয় অ্যারে।
প্রশ্নঃ একমাত্রিক অ্যারে কাকে বলে?
উত্তরঃ যে অ্যারেতে একটি মাত্র কলাম ও একাদিক সারি অথবা একটি মাত্র সারি এবং একাদিক কলাম উপস্থাপন করা হয় তাকে একমাত্রিক অ্যারে বলা হয়।
প্রশ্নঃ দ্বিমাত্রিক অ্যারে কাকে বলে?
উত্তরঃ যে অ্যারেতে একাদিক সারি ও একাদিক কলামে ডেটা উপস্থাপন করা হয় তাকে দ্বিমাত্রিক অ্যারো বলা হয়।
প্রশ্নঃ ফাংশন কাকে বলে?
উত্তরঃ বড় কোন প্রোগ্রামকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করার পদ্ধতিকে ফাংশান বলে।
প্রশ্নঃ লাইব্রেরি ফাংশন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে ফাংশন পূর্ব থেকে তৈরি করা থাকে এবং ফাংশনগুলোর ফাংশন প্রোটোটাইপ বিভিন্ন হেডার ফাইলে দেওয়া থাকে। এ ধরনের ফাংশন গুলোকে লাইব্রেরি ফাংশন বলে।
প্রশ্নঃ মধ্য স্তরের ভাষা কী?
উত্তরঃ ১৯৬০ সালের দিকে ইংরেজী ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে কম্পিউটারের প্রোগ্রাম রচনার করার জন্যে যে ভাষা আবিষ্কৃত হয় তা মধ্য স্তরের ভাষা নামে পরিচিত।
প্রশ্নঃ উচ্চস্তরের ভাষা কী?
উত্তরঃ উচ্চস্তরের ভাষা হলো ইংরেজী ভাষা এবং আরো বেশি কাঠামোবদ্ধ। উচ্চস্তরের ভাষা আমেরিকান ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড ইন্সটিটিউটের নির্দেশ মেনে বেশির ভাগ উচ্চস্তরের ভাষা তৈরী হয়। উচ্চস্তরের ভাষা সহজে লেখা যায়, সংকলন করা যায় এবং ভুল সংশোধন করা যায়। উচ্চস্তরের ভাষায় বৈশিষ্ঠ্য হল ইহা বানিজ্যিক ও বৈজ্ঞানিক প্রয়োগের ভাষা। এটা বহু প্রয়োগ ও চতুর্থ প্রজন্ম ভাষা। তাই উচ্চস্তরের ভাষাকে বহু প্রয়োগের ভাষা বলা হয়।
প্রশ্নঃ চতুর্থ প্রজন্মের ভাষা কী?
উত্তরঃ বিজ্ঞানীগণ কম্পিউটারের ভাষা উন্নতির জন্য অবিরত চেষ্টা করে চলছেন। তাদের অবিরত চেষ্টার ফসল হলো চতুর্থ প্রজন্মের ভাষা। চতুর্থ প্রজন্মের ভাষার সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে 4GL, ফক্স প্রো, ভিজুয়্যাল বেসিক, কোবল, এম এস এক্সেস, এস.কিউ,এল. এ সব প্রোগ্রামগুলো চতুর্থ প্রজন্মের ভাষা নামে পরিচিত। এ সব ভাষায় ডাটাবেজ কুয়েরী, অনুসন্ধান, সাজানো এবং প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সুবিধা লাভ করা যায়।
প্রশ্নঃ গঠন ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কম্পিউটার ভাষাকে কত ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তরঃ পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়।
IDE-এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তরঃ Integrated Development Environment
প্রশ্নঃ Constant কাকে বলে?
উত্তরঃ Constant বলতে এমন কোনো মানকে বোঝানো হয়েছে যা প্রোগ্রাম করার পর পরিবর্তন করা যায় না। অর্থাৎ ’সি’ প্রোগ্রামিংয়ের প্রোগ্রাম নির্বাহের সময় যে সকল মানের কোনো পরিবর্তন হয়না তাকে ধ্রবক বলে।
চলক কাকে বলে?
উত্তরঃ চলক মানে পরিবর্তনশীল। চলক বলতে এমন কোনো মানকে বোঝানো হয় যা প্রোগ্রামে চালু করার পর পরিবর্তন করা যায়। অর্থাৎ ’সি’ প্রোগ্রামিংয়ে প্রোগ্রাম নির্বাহে সময় যে সকল মান ব্যবহারকারী প্রয়োজনানুসারে পরিবর্তন করতে পারে তাকে চলক বলে।